মোঃরুবেল মিয়া
মির্জাপুর উপজেলার বংশাই ও ঝিনাই নদী ও নদীর সঙ্গে সংযোগ হওয়া বিভিন্ন নালার খননকৃত পাড়ের মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে। সরকারের গৃহীত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। সম্প্রতি বিরল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে নদীর পাড়ের মাটি কেটে বিভিন্ন বসতবাড়ি নির্মাণে ও ইটভাটায় নিয়ে যেতে দেখা গেছে। স্থানীয় প্রশাসন কিছু জেল জরিমানা করিলেও থেমে নেই তাদের ব্যবসা। জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার বংশাই নদী ও ঝিনাই নদীর সঙ্গে সংযোগ হওয়া বিভিন্ন নালা খনন করা হয়। বংশাই নদী ও নালার পাড় দেদার কেটে মাটি বিক্রির প্রতিযোগিতা শুরু করেছে একটি সিন্ডিকেট। সোমবার বিকালে মির্জাপুর উপজেলার জার্মুকী ইউনিয়নের গুনটিয়া ,চুকুরিয়া, উফুল্কী মাঝালিয়া,
গ্রামের বংশাই নদীর দক্ষিন পাড় থেকে ভেকু দিয়ে পাড়ের মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। উফুল্কী গ্রামের বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন আমাদের এলাকায় যাতায়াতের ব্যবস্থা ভালো না, তাই প্রশাসনের লোক সবসময় আসতে পারে না।ইচ্ছেমতো নদীর মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছেন। মাটি ব্যবসারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতে পারেনা। কিছু বললে তাঁরা উল্টো হুমকি দেয়। আমরা প্রশাসনে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি গ্রাম উফুল্কী গ্রামে মাটি কাটার বন্ধ করা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ফতেপুর ইউনিয়ন থলপাড়া, সুতালড়ি, হাটফতেপুর, আদাবাড়ী এলাকায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই অবাধে নদীর পাড় কেটে বিক্রি করছে।
১০ থেকে ১২টি টাক্টারে করে নদীর পাড় কেটে বিক্রি করছেন ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি। ওই মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন বসতবাড়ী ও ইটভাটায়। এ ছাড়া উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের গেড়ামারা চান্দুলিয়া গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খননকৃত নদী নালার দুই পাড়ের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে এস্কেভেটর দিয়ে পাড়ের মাটি কাটার অভিযোগ রয়েছে। আর ওই মাটি বিক্রি করছে গ্রামের ট্রাক্টর ব্যবসায়ী যার নাম বলিতে চায়না কোন লোক জন। এলাকাবাসী বলেন তারা দলের বড় বড় নেতা,৫ই আগস্টের পর থেকে যে ব্যবসা আওয়ামীলীগে সরকারে নেতা কর্মীরা করেছেন,এখন শুধু হাত বদল হয়েছে,সেই ভেকু সেই গাড়ি ঠিকই আছে শুধু ব্যবসায়ী পরিবর্তন হয়েছে। এলাকার প্রভাবশালী রাজনীতি নেতাদের সাহায্য নিয়ে নদীর পাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। নদীর পাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান,উপজেলা প্রশাসন ম্যানেজ করেই তারা এই মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছেন বলে শামিম নামে এক ভেকু ডাইভার জানান।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু তারপরও অসাধু কিছু বালু ব্যবসায়ীরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই অবাধে নদীর পাড় কেটে বিক্রি করছে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা কোন অবৈধ বালু ব্যবসায়ীকে ছাড় দেবো না। তবে অভিযান পরিচালনা করতে গেলে বালু ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। ফলে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় না। তারপরও আমরা সজাগ রয়েছি। কোথাও অবৈধ বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া মাত্র তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। অবৈধ এসকল বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কাজ করতে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। নদী থেকে অবৈধ ভাবে যারাই মাটি উত্তোলন করুক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।