ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলামিক
  7. কবিতা
  8. কৃষি সংবাদ
  9. ক্যাম্পাস
  10. খাদ্য ও পুষ্টি
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. ছড়া
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আ.লীগের খোলস পাল্টে ইব্রাহিম পার্টি এখন বিএনপি নেতা চলমান চাঁদাবাজি সহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড

মামুন রাফী, স্টাফ রিপোর্টার
ডিসেম্বর ৫, ২০২৪ ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

 

মামুন রাফী, স্টাফ রিপোর্টার

হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপের আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ছিল নিয়মিত ওঠাবসা। নিজের এলাকায় দাঁপিয়ে বেড়াতেন আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে। তবে এখন বিএনপি নেতা পরিচয়ে করছেন ব্যবসা দখল, মামলা হামলার ভয়, লুটপাট, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত, আর এসব অনিয়ম করছেন হাতিয়ার সাবেক এমপি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের লোক পরিচয়ে।

 

সম্প্রতি গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভোল পাল্টে তিনি হয়ে গেছেন বিএনপির নেতা। বলছি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের মোহাম্মদ ইব্রাহিম ওরুপে ইব্রাহিম পার্টির কথা। নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ দিনাজের সহ শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত তিনি।

 

একটা ভিডিওতে দেখা যায়, নিঝুম দ্বীপের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিনের এবং সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর নৌকার ভোট চেয়ে প্রচার করছেন। তিনি বলেন মোহাম্মদ আলীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে হাতিয়ার এমপি বানাতে হবে। বানানোর পরে আল্লাহর নাম লই সরকার গঠন করবে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা।

 

অন্য একটা ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিনের সাথে মিছিল করছেন এবং স্লোগান দিচ্ছেন সিল মারো ভাই সিল মারো, নৌকা মার্কায় সিল মারো।

 

হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর সাথেও ছিল তার সখ্যতা। তাদের সাথে ছবি তুলেই নিজেকে জাহির করতেন আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে। নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতার সাথে করতেন ব্যবসা।

 

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরের দিন কয়েকজন বিএনপির কর্মীকে ডেকে নেন ইব্রাহিম পার্টি। আর্থিক সুবিধা দিয়ে তাদের নিয়ে এলাকায় কাজ করারও প্রস্তাব দেন।

 

স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতি ইব্রাহিম পার্টি তার গ্রুপের ২০/২২ লোকজন নিয়ে পুরা নিঝুম দ্বীপে একটি তান্ডব করতেছে, চাঁদাবাজি জমি দখল, লুটপাট,ভাংচুর, বিভিন্ন ভাবে মানুষকে হুমকি-ধমকি দিয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়, এবং অনেকের অনেক রকম ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চারদিকে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে বাড়ি পাহারা দেয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা নেন, এছাড়াও অসংখ্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সাধারণ জনগণ, মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে, হাজার হাজার টাকা চাঁদাবাজি করছেন। তার কারনে সব সময় একটা আতঙ্ক বিরাজ করে নিঝুম দ্বীপে।

 

নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করলেও তার আশেপাশের সবাই একসময়ের আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্তরা। তার সাথে রয়েছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পদধারী অনেকেই। সেই সাথে তার গ্রুপে যোগ দিয়েছে কিছু উগ্র উশৃংখল ছাত্রদল, যুবদল, বিএনপির পদধারী, কর্মী ও সমর্থকরা।

 

গত ২ নভেম্বর রাতে ইব্রাহিম পার্টি তার লোক জন নিয়ে নিঝুম দ্বীপ নামার বাজার চার-পাঁচটা দোকান ভাঙচুর করে, এবং উপরে বাজার ও সৎফুল বাজার গিয়ে একজনকে মারধর করছে, দোকানদার নাহিদের দোকান ভাঙচুর করছে, এবং বাসের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। দোকানদার নাহিদ থেকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে ইব্রাহিম পার্টি সহ তার লোকজন। না হয় ব্যবসা করতে দিবে না বলেও হুমকি দেয় বলে জানিয়েছেন নাহিদ।

 

নিঝুম দ্বীপে পর্যটকদের ঘুরতে নিয়ে যাবার ট্রলার থেকে, প্রতি টিপে ইব্রাহিম পার্টির ছেলে সোহেলকে ১০০ টাকা চাঁদা দিতে হয় আর নিঝুম দ্বীপ থেকে মনপুরা নিয়ে গেলে ২০০ টাকা দিতে হয়, এবং এই চাঁদাবাজিটা আগে আওয়ামী লীগ করত আর এখন বিএনপির নাম করে ইব্রাহিম পার্টি সহ তার ছেলে সোহেল করে বলে জানিয়েছে মাঝিরা

 

সম্প্রতি নামার বাজার, বন্দরটিলা বাজারের থেকে এলাকার বেশ কিছু গিয়ে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে ব্যবসা দখলে নেয়ার চেষ্টা এবং জাল দোকানদার শামীমের কাছে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছে, কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে সেখানে তার লোকজন দিয়ে আন্দোলন করাবেন বলে হুমকি দিয়ে আসেন।

 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইব্রাহিম পার্টি জানান, আমার কোন বিএনপির পদ পদবী নেই, যারা বলে আমি আওয়ামী লীগ করতাম তারা কি জানে না আমি ২০১৬ সালে ধানের নির্বাচন করেছি ৩ হাজার ভোট পাই, তাহলে আমাকে তারা কেন আওয়ামী লীগ বলে, যারা বলে তারা আওয়ামী লীগ করে। আমি কোন চাঁদাবাজি করি না। আমি ব্যবসা করে খাই। যে বলে তাকে আমি দেখিয়ে ছাড়বো, আমার নিঝুম দ্বীপে আমার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারবে না। সে যেই অঞ্চলেই থাকুক না কেন তাকে গর্ত থেকে হলেও বের করে আনবো। ৫ আগস্টের পরে আমি মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের নামে নিঝুম দ্বীপে ৩ টি ক্লাব দিয়েছি, আমার পকেটের টাকা দিয়ে কারো থেকে চাঁদাবাজি করে নয়।

 

হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, ইব্রাহিম পার্টিকে কোনদিন বিএনপির কোনো কর্মসূচীতে দেখা যায়নি। এতদিন তাকে আওয়ামী লীগের সাথেই দেখা গেছে। এখন হঠাৎ পরিচয় দেন বিএনপির নেতা হিসেবে। এমন সুবিধাবাদী লোক বিএনপিতে আসলে বিএনপির বদনাম হবে।

 

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার জানান, এই ইব্রাহিম পার্টি আমাদের দলের কেউ না। বিএনপির কোনো অঙ্গ সংগঠনেও তার কোনো পদ নেই। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আশ্রাফ বলেন, বিএনপির কোনো অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে ইব্রাহিম পার্টির কোনো পদ নেই।

 

হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক খোকন বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের এসব লোকজন এখন বিএনপিতে প্রবেশের চেষ্টা করছে। এদের বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
%d bloggers like this: